** গোলামীর জিঞ্জির থেকে মুক্তি **
স্বাধীনতা স্পর্শ মনি সবাই ভালবাসে
সুখের আলো জ্বালো বুকে দুঃখের ছায়া নাশে
স্বাধীনতা সোনার কাঠি খোদার সুধা দান
স্পর্শে তাহা নেচে ওঠে শূন্যে দেহে প্রাণ
মনুষ্যত্বের বান ডেকে যায় পশুর হৃদয় তলে
বুক ফুলায়ে দাড়ায় ভীরু স্বাধীনতার বলে
দর্প তরে পদাহত উচ্চ করে শীর
শক্তিহীনেও স্বাধীনতা আখ্যাদানে বীর।
অর্থ হায়রে অর্থ? হায়রে পাতকী অর্থ ? তুই জগতের সকল অর্থের মুল। জীবের জীবনের ধ্বংস সম্পত্তির বিনাশ, পিতা পুত্রের শত্রুতা, স্বামী-স্ত্রীতে মনোমালিন্য, ভ্রাতা বগ্নিতে কলহ, রাজা প্রজার বৈরি ভাব বন্ধু বান্ধবে বিচ্ছেদ, বিবাদ, বিসংবাদ, কলহ, বিরহ, বিসর্জন, বিনাশ এ সকলই তোমার জন্য, সকল অর্থের মুল কারনই তুমি। তোমার কি মোহনী শক্তি ! কি মধু মাখা বিষযুক্ত প্রেম, রাজা, প্রজা, ধনি, নির্ধন যুবক, বৃদ্ধ, সকলেই তোমার জন্য ব্যস্ত, মহা ব্যস্ত, প্রাণ ওষ্ঠাগত। তোমারই জন্য কেবল তোমারই কারনে কত জনে তীর, তরবারী, বন্দুক, বর্শা গোলাগুলি অকাতরে বক্ষ পাতিয়া ভরিতেছে। তোমারই জন্য অগাদ জলে ডুবিতেছে, ঘোর অরন্যে প্রবেশ করিতেছে। পর্বত শিখরে আরোহন করিতেছে। রক্ত মাংশপেশী, মরমানু সংযোজিত শরীর ছলনে, তোমারই জন্য শূন্যে উড়াইতেছে। কি কহুক, কি মায়া, কি মোহনী শক্তি। তোমার কুহকে কে না পড়িতেছে ? কে না ধোকা খাইতেছে ? কে না মজিতেছে ? তুমি দুর হও ! তুমি দুর হও ! তোমার নাম করিয়া কথা কহিতে অংগ শিহরিয়া ওঠে।
অভাবের তাড়নায় নিরন্ন মানুষগুলি গ্রাম ছেড়ে শহর মুখি হয় এক মুঠো ভাতের জন্য দুটো টাকার জন্য কিন্তু তারা পেটের দায়ে উচু তলার মানুষের গোলাম বাদীর কাজে নিযুক্ত হন। দিন রাত কাজ করেও তাদের সন্তুষ্টির পরিবর্তে পেতে হয় ধিক্কার, ছোটলোক। গরীব শুধু চোখের পানি ফেলার জন্য যুগে যুগে জন্ম নেননি। এ যুগে অনাহার ক্লিষ্ট দুঃখি মানুষ গুলি কে জাগিয়ে তুলতে হবে। আমাদের মাঝে মায়া মমতা বোধ বলতে কিছু নেই। থাকলে কাউকে কেউ ঠকাতাম না। কারো ক্ষতি কেউ করতাম না। কারো দুঃখে হাসতাম না। কেউ লেপ তোষক দালান কোঠায় ঘুমায় আবার কেউ রাস্তা ঘাটে বিনা বিছানায় ইটের উপড় মাথা রেখে ঘুমায়। কেউ পোলাও কুর্মা ভাল খানা খেয়ে জীবন ধারন করছে আবার কেউ ফেলে দেওয়া খাবারের আসে থালা নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে দুল ছাই খেয়ে তাড়িত হচ্ছে।
বিধির একি নিয়ম
আমাদের মানুষ প্রাণ কেন হবে এত নিরেট পাষান
আমরা প্রত্যেকে আদম হাওয়ার বংশধর
কাজেই
দুনিয়ায় কেউ পাবে
কেউ পাবে না
তা হবে না, তা হবে না
সবাই কে সব কিছু বন্টন করে দিতে হবে। যেন পৃথিবীতে গরীব ছোট বলে কেউ কাউকে ধিক্কার পেতে না হয়।
নবীজি চাকরাণী দিয়ে কাজ করান নি। আমরা কেন করাব ?
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবনি পরে
সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
আপনি যদি বাবু সেজে আরাম করে অন্যকে দিয়ে কঠিন কাজ করিয়ে কষ্ট দেন তবে পরের যুগে তার গোলামী আপনাকে করতে হবে। এ জন্য নবী নিজের কাজ নিজে করেন। গোলামীর জিঞ্জীর থেকে সবাই কে মুক্তি পেতে হবে।
অন্ধ মোহ বন্ধ তব দাও মুক্তি করি
রেখনা বসায়ে দ্বারে জাগ্রত প্রহরী
হে জননী আপনার স্নেহ কারাগারে
সন্তানের চীর জন্ম রন্দী রাখিবারে।
বেষ্ঠন করিয়া তারে আগ্রহ পরশে
জীর্ণ করিয়া দিয়া লালনের রসে;
মন্যুষ্যত্ব স্বাধীনতা করিয়া শোষণ
আপন ক্ষুদিতচিত্ত করিবে পোষণ
দীর্ঘ গর্ভবাস হতে জন্ম দিলে যার
স্নেহ গর্ভে গ্রাসিয়া কে রাখিবে আবার?
চলিবে সে এ সংসারে তোর পিছু পিছু
সে কি শুধু অংশ তোর আর নহে কিছু ?
নিজের সে বিশ্বের সে বিশ্ব দেবতার
সন্তান নহে গো মাতা সম্পত্তি তোমার।